টেস্টে এ বছর অস্ট্রেলিয়া,ভারত,পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ
২০২৩ সাল ছিল ওয়ানডে বিশ্বকাপের বছর। তাই দল গুলো ওয়ানডে নিয়ে বেশি ভেবেছে। এবং ওয়ানডে বেশি খেলেছে। যার ফলে টেস্ট ম্যাচ কম খেলেছে প্রায় সব দল। বাংলাদেশেও এর ব্যাতিক্রম হয়নি। বাংলাদেশ এই বছর টেস্ট খেলেছে মাত্র ৪টি। যেখানে ২০২২ সালে বাংলাদেশ টেস্ট ম্যাচ খেলেছিল ১০টি। তবে এই বছর টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ বেশ সফল বলা যায়। চলতি বছরে চারটি টেস্ট ম্যাচের মধ্যে তিনটি জয় টাইগারদের। ২০২২ সালে ১০ ম্যাচে মাত্র ১টি জয় পায় বাংলাদেশ। শুধু জয় নয় এই বছর বাংলাদেশের খেলার ধরন ছিল ভিন্ন।
২০২৩ সালে বাংলাদেশ ওভার প্রতি রান তুলেছে ৪.০৬ রেটে। দ্রত রান তোলার দিক থেকে ইংল্যান্ডের পরেই টাইগারদের অবস্থান। ইংল্যান্ড ওভার প্রতি রান তুলেছে ৪.৮৭ রেটে। ইংল্যান্ড ৮টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে জয় পেয়েছে ৪ ম্যাচে। হেরেছে ৩টি ম্যাচে ড্র করেছে ১টি।
চলতি বছরে সবচেয়ে বেশি টেস্ট খেলেছে অস্ট্রেলিয়া। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন তারা। অস্ট্রেলিয়া চলতি বছরে ১৩টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে। ১৩ টেস্ট অস্ট্রেলিয়ার জয় ৬টিতে, হার ৪টি ও ৩টি ড্র। সবচেয়ে কম টেস্ট খেলেছে আফগানিস্তান—১টি। চলতি বছরে বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ড ছাড়া আর কোনো দল ৪ এর বেশি রেটে রান তুলতে পারেনি।
ওভার প্রতি দ্রত রান তোলার দিক দিয়ে বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের পরেই আছে টেস্ট ক্রিকেটের শক্তিশালী দুই দল নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তান। ৭ টেস্ট খেলা নিউজিল্যান্ড রান তুলেছে ওভার প্রতি ৩.৫২ রেটে। ৫ টেস্ট খেলা পাকিস্তান ওভারপ্রতি রান তুলেছে ৩.৪৯ রেটে।
৭টি টেস্ট ম্যাচের মধ্যে ৪টিতে জয় পেয়েছে নিউজিল্যান্ড, ২টি হার ১টি ড্র করেছে তারা। ৫ টেস্ট খেলা পাকিস্তানের জয় ২টিতে হার ২টি ১টি ড্র।
সবচেয়ে বেশি ১৩ টেস্ট খেলা অস্ট্রেলিয়া খেলেছে যেভাবে টেস্ট ক্রিকেট খেলতে হয়। ওভার প্রতি রান তুলেছে ৩.৩১ করে । আরেক পরাশক্তি এ বছর ৮ টেস্ট খেলে জিতেছে ৩ ম্যাচ, ২টি হারের পাশাপাশি হেরেছে ৩টি। ওভার প্রতি রান তুলেছে ৩.৩৬ করে।
২০২৩ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের আগে আয়ারল্যান্ড ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট খেলেছিল টাইগাররা। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ জয়ের আগে আয়ারল্যান্ড ও আফগানিস্তানের বিপক্ষেই জয় পায় বাংলাদেশ। তবে সবচেয়ে বড় জয় ছিল আফগানিস্তনের বিপক্ষে ৫৪৬ রানের। তবে এই দুই টেস্টে বাংলাদেশ জয়ের সঙ্গে একটা বার্তা দিয়েছে—টেস্ট ক্রিকেটেও ভিন্ন কিছু করার বিষয়ে ভাবছে টাইগাররা!
বছরের শুরুর দিকে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে অনুষ্টিত হওয়া একমাত্র টেস্টের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ওভারপ্রতি রান তুলেছে ৪.৫৮ রেটে। দ্বিতীয় টেস্টে রান রেট বাড়ে আরও। ওভার প্রতি ৫.০৭। এরপর আফগানিস্তানের বিপক্ষে সকল মাত্রা ছাড়িয়ে যায় বাংলাদেশ। খেলে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের রানরেট ছিল ওভার প্রতি ৪.৪৪ রান করে। আর দ্বিতীয় ইনিংসে তা গিয়ে দাঁড়ায় ৫.৩১।
তবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অতটা আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ রান তোলে ওভার প্রতি ৩.৬৩ রেটে। দ্বিতীয় ইনিংসে তা কমে দাঁড়ায় ৩.৩৫। যদিও এ টেস্টেই প্রথমবার টেস্টে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পায় নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
মিরপুরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট রানের গতি আরও কমে যায়। বাংলাদেশ রান তোলে মাত্র ২.৫৯ রেটে। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে আবারও আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। কঠিন উইকেটে রান তোলে ৪.১১ রেটে।
তবে টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের বড় পরীক্ষাটা অবশ্য হবে আসন্ন বছরে। ২০২৪ সালে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারতের মতো বড় দলের বিপক্ষেও যে টেস্ট খেলবে। এই সিরিজগুলোতেও কি আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে পারবে বাংলাদেশ?