;
বাংলাদেশি স্পিনারকে ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করলো আইসিসি

বাংলাদেশি স্পিনারকে ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করলো আইসিসি

বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটে নেমে এলো এক অন্ধকার অধ্যায়। সতীর্থ ক্রিকেটারকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেওয়ার অপরাধে পাঁচ বছরের জন্য সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ হলেন স্পিনার সোহেলি আক্তার। আইসিসির অ্যান্টি-করাপশন ইউনিট (আকসু) তদন্ত শেষে এই কঠোর শাস্তির ঘোষণা দেয়। এক মুহূর্তের লোভ যে একটি ক্যারিয়ারকে ধ্বংস করে দিতে পারে, সেটির জলজ্যান্ত প্রমাণ হয়ে থাকলেন সোহেলি।

গোপন প্রস্তাব, প্রকাশ্য শাস্তি

২০২৩ সালের নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চলাকালে এক বাংলাদেশি নারী ক্রিকেটারকে মোবাইল ফোনে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেন সোহেলি। ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণে প্রভাব বিস্তার করতে পারলে মোটা অঙ্কের অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় তাকে। কিন্তু লোভের ফাঁদে পা না দিয়ে সততার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন সেই ক্রিকেটার। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি আকসুকে জানান, আর এখান থেকেই শুরু হয় তদন্ত।

আইসিসির দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর বেরিয়ে আসে ভয়ংকর সত্য। সোহেলি শুধু ফিক্সিংয়ের সঙ্গে যুক্তই ছিলেন না, বরং তিনি অন্যকেও এতে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন। এর ফলস্বরূপ, আইসিসির দুর্নীতি বিরোধী কোডের ৫টি ধারা লঙ্ঘনের দায়ে মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) তাকে ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করা হয়।

কোন অপরাধে এত বড় শাস্তি?

আইসিসি তাদের বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে, সোহেলি নিম্নলিখিত গুরুতর অপরাধ করেছেন—

ম্যাচ ফিক্সিং বা পারফরম্যান্স প্রভাবিত করা (২.১.১ ধারা)

ঘুষের বিনিময়ে অনৈতিক কার্যক্রমে লিপ্ত হওয়া (২.১.৩ ধারা)

অন্য খেলোয়াড়কে দুর্নীতিতে প্ররোচিত করা (২.১.৪ ধারা)

ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব সম্পর্কে আকসুকে না জানানো (২.৪.৪ ধারা)

তদন্তে বাধা সৃষ্টি করা ও তথ্য গোপন করা (২.৪.৭ ধারা)

অভিষেক থেকে পতন—এক ক্যারিয়ারের করুণ পরিণতি

একসময় বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের উদীয়মান স্পিনার হিসেবে আলোচনায় ছিলেন সোহেলি আক্তার। ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হলেও ক্যারিয়ারের গতি ছিল ধীর। জাতীয় দলের হয়ে মাত্র ২টি ওয়ানডে ও ১৩টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি, যেখানে নিয়েছেন ১১টি উইকেট।

শেষবার ২০২২ সালে জাতীয় দলের জার্সিতে দেখা গিয়েছিল তাকে। এরপর দলে জায়গা হারালেও ক্রিকেটের সঙ্গে ছিলেন। কিন্তু অনৈতিক পথ বেছে নেওয়ায় পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা কার্যত তার ক্যারিয়ারের ইতি টেনে দিল।

এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ থেকে, যা চলবে ২০২৯ সাল পর্যন্ত। পাঁচ বছর পর তিনি ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন ঠিকই, তবে ততদিনে তার বয়স বেড়ে যাবে, ছন্দ হারাবে হাত, বিশ্বাস হারাবে দল ও বোর্ড। হয়তো তিনি ফিরবেন না আর কখনও, হারিয়ে যাবেন সময়ের গহ্বরে।

সোহেলির এই ঘটনা শুধু ব্যক্তিগত নয়, এটি গোটা ক্রিকেট বিশ্বের জন্যই এক শিক্ষা। সততা ও নিষ্ঠার পরীক্ষায় যারা ব্যর্থ হন, তাদের শেষ ঠিকানা হয় অন্ধকার।

প্রকাশক ও সম্পাদকঃ জাকারিয়া ইসলাম

ঠিকানা: ৫২/৬, র‍্যামস উইনিটি, পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থপথ, ঢাকা-১২০৫

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন: ০১৭২২-৫৬৮০০৮

সোশ্যাল মিডিয়াতে আমরা

info@allnewsbd24.com

allnewsbd24.info@gmail.com

© ২০২৫ | অল নিউজ বিডি ২৪ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ডিজাইন | অল নিউজ বিডি ২৪