প্রকাশিত: ১২:৩১ ৯ জানুয়ারি ২০২৫
মাশরাফি মর্তুজার বিসিবি সভাপতির পদে সম্ভাব্য নিয়োগ: রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং ক্রিকেটের ভবিষ্যত
বাংলাদেশ ক্রিকেট বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা-সমালোচনার মুখোমুখি, যা কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে মাশরাফি বিন মোর্তুজার বিসিবি (বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড) পরবর্তী সভাপতি হিসেবে নিয়োগের সম্ভাবনা। এই বিষয়টি ক্রিকেট মহল ও অন্যান্য মহলে গভীর আলোচনা সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে বিসিবির দুই সদস্য ফারুক আহমেদ ও নজমুল আবেদিন ফাহিমের মধ্যে চলমান ক্ষমতার সংগ্রাম, যা বোর্ডের ভেতর ব্যাপক অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে।
বিসিবির অভ্যন্তরীণ বিরোধের কারণে প্রশাসনিক অস্বস্তি ও নেতৃত্বের মধ্যে অমিল তৈরি হয়েছে। আহমেদ ও ফাহিমের মধ্যে চলমান উত্তেজনা সভাগুলিকে ব্যাহত করেছে, যার ফলে বোর্ডের জন্য প্রয়োজনীয় কোয়ারাম পূরণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এমন এক পরিস্থিতিতে মাশরাফির নাম উঠে এসেছে একটি সম্ভাব্য সমাধান হিসেবে, যাকে একজন স্থিতিশীল নেতার ভূমিকায় দেখা হচ্ছে, যিনি বাংলাদেশের ক্রিকেটের শাসনব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হবেন।
মাশরাফি মর্তুজা নেতৃত্বের ক্ষেত্রে অচেনা নয়। বাংলাদেশের জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক হিসেবে তিনি মাঠে ও মাঠের বাইরে ব্যাপক সম্মান ও শ্রদ্ধা অর্জন করেছেন। তার নেতৃত্বের গুণাবলী এবং নড়াইল থেকে দুইবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগের বর্তমান সরকারের জাতীয় সংসদের হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালন তাকে একজন যোগ্য নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এই কারণেই তিনি বিসিবি সভাপতির পদে জনপ্রিয় প্রার্থী হিসেবে উঠে এসেছেন। মাশরাফিকে একজন নিরপেক্ষ নেতা হিসেবে দেখা হচ্ছে, যিনি উদ্ভূত পরিস্থিতি, বিশেষ করে তারকা ক্রিকেটার শাকিব আল হাসান নিয়ে সাম্প্রতিক বিতর্কগুলো সুষ্ঠুভাবে সামলাতে সক্ষম হবেন এবং বোর্ডের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার আনতে পারবেন।
বিসিবির কাছাকাছি সূত্রগুলো বলছে যে, নেতৃত্বের পরিবর্তন অচিরেই আসতে পারে, এবং এই পরিবর্তন আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ঘটতে পারে। বর্তমান নেতৃত্বের প্রতি বাড়তি হতাশা এবং নেতৃত্বের পরিবর্তনের দাবি মাশরাফির প্রার্থীতা আরও শক্তিশালী করেছে। তবে, তার পথের সামনে রয়েছে কিছু চ্যালেঞ্জ। বিসিবির নিয়ম অনুযায়ী, একজন প্রার্থীকে প্রথমে কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হতে হবে, তবেই তিনি সভাপতির পদে প্রার্থী হতে পারবেন। মাশরাফি বর্তমানে কাউন্সিলর না হওয়ায়, তাকে এই পদে দাঁড়ানোর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা বা কোটা সিস্টেম ব্যবহার হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও, দেশের বর্তমান সরকার মাশরাফির প্রার্থিতাকে সমর্থন করবে কিনা তা নিয়ে কিছু অনিশ্চয়তা রয়েছে। বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত অস্থির এবং কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে অতীতে ওঠা বিতর্কগুলি সরকার কতটা সহায়ক হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে।
মাশরাফি মর্তুজার বিসিবি সভাপতির পদে প্রার্থীতা নিয়ে আলোচনা যতই বাড়ছে, ততই বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠছে। তার নেতৃত্বের গুণাবলী এবং জনপ্রিয়তা তাকে শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করলেও, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক বাধাগুলির কারণে তার নিয়োগের পথ কঠিন হতে পারে। তবে, সময়ের সাথে সাথে আরও কিছু নতুন পরিস্থিতি সামনে আসতে পারে। মাশরাফি যদি বিসিবির নেতৃত্ব গ্রহণ করেন, তবে তা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা হতে পারে, এমনটাই অনেকেই আশাবাদী।
উপসংহার: মাশরাফি মর্তুজার বিসিবি সভাপতির পদে সম্ভাব্য নিয়োগ বর্তমানে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে, যেখানে অনেকেই আশা করছেন যে তার নেতৃত্ব ক্রিকেট বোর্ডে প্রয়োজনীয় স্থিতিশীলতা এবং সংস্কার আনতে সক্ষম হবে। তবে, তার নিয়োগের পথে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জ রয়েছে, এবং সময়ই বলে দেবে তিনি এসব প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করতে সক্ষম হন কিনা এবং বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যত নিয়ে কী ধরনের নেতৃত্ব প্রদান করতে পারেন।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ জাকারিয়া ইসলাম
ঠিকানা: ৫২/৬, র্যামস উইনিটি, পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থপথ, ঢাকা-১২০৫
বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন: ০১৭২২-৫৬৮০০৮
© ২০২৫ | অল নিউজ বিডি ২৪ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ডিজাইন | অল নিউজ বিডি ২৪