অবশেষে নতুন রাজনৈতিক দলের নাম ঘোষণা

গণ অধিকার পরিষদের একটি গোষ্ঠী নতুন নাম দিয়েছে ‘আঁম জনতা দল’ (জনতার দল), যা তাদের আক্রমণবিরোধী আন্দোলনকে আরো শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে। ২৮ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) ঢাকা শহরের পুরানা পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে গোষ্ঠীটির আহ্বায়ক মিয়া মশিউজ্জামান নতুন নামের ঘোষণা করেন।

মিয়া মশিউজ্জামান বলেন, "আমরা আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে, গণ অধিকার পরিষদ এখন থেকে ‘আঁম জনতা দল’ নামে পরিচিত হবে। এই পরিবর্তন আমাদের আক্রমণবিরোধী সংগ্রামের সাংগঠনিক রূপান্তরের প্রতীক এবং জনগণের সাথে আরও সরাসরি সম্পর্ক স্থাপনের একটি নতুন প্রয়াস।"

নাম পরিবর্তনের কারণ

গণ অধিকার পরিষদের অভ্যন্তরীণ বিভাজনের কারণে এই নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২০২৩ সালের জুন মাসে দলটি দুটি গোষ্ঠীতে বিভক্ত হওয়ার পর একই নাম ব্যবহার করায় বিভ্রান্তি এবং অপ্রয়োজনীয় সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়েছিল। এই বিভ্রান্তি এড়াতে এবং আক্রমণবিরোধী আন্দোলনকে একত্রিত করার জন্য মিয়া মশিউজ্জামান নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীটি নতুন নাম গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়।

মশিউজ্জামান আরও বলেন, "আমাদের মূল মূল্যবোধগুলো অপরিবর্তিত থাকবে — সার্বভৌমত্ব, আত্মনির্ভরশীল অর্থনীতি এবং ভালো শাসন ব্যবস্থা। ‘আঁম জনতা দল’ এর মাধ্যমে আমরা আমাদের প্রচেষ্টাগুলো আরও শক্তিশালী করতে এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাব।"

দলের নতুন মূলনীতি ও স্লোগান

‘আঁম জনতা দল’ এর মূলনীতি সমূহ হলো:

• সার্বভৌমত্ব
• আত্মনির্ভরশীল অর্থনীতি
• ভালো শাসন ব্যবস্থা

দলের স্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে “আত্মনির্ভরশীল অর্থনীতি ও ভালো শাসন ব্যবস্থার মাধ্যমে সমৃদ্ধি।"

গোষ্ঠীটির ইতিহাস এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

গণ অধিকার পরিষদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ২০২১ সালের ২৬ অক্টোবর ড. রেজা কিবরিয়া এবং নুরুল হক নুর এর নেতৃত্বে। তবে, অভ্যন্তরীণ মতবিরোধের কারণে দলটি ২০২৩ সালে দুইটি গোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়ে যায়। রেজা কিবরিয়ার পদত্যাগের পর নুরুল হক নুর ও রাশেদ খানের নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠী এবং মিয়া মশিউজ্জামান ও ফরুক হাসানের নেতৃত্বাধীন অন্য একটি গোষ্ঠী গঠন হয়।

যদিও গোষ্ঠী দুটি বিভক্ত হয়েছে, তবুও তারা উভয়েই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন ও প্রতিবাদে বিরোধী দল বিএনপির সাথে একত্রে কাজ করেছে। নুরুল হক নুরের গোষ্ঠীটি নির্বাচন কমিশনের কাছে নিবন্ধিত হয়েছে।

ত্যাগের স্মৃতি

আক্রমণবিরোধী আন্দোলনে প্রাণ উৎসর্গ করা শহীদদের স্মরণ করে মশিউজ্জামান বলেন, "আমাদের সাতজন সহযোদ্ধা ২৪তম আন্দোলনে প্রাণ দিয়েছেন এবং শতাধিক আহত হয়েছেন। তাদের ত্যাগ আমাদের অনুপ্রেরণা দেয়, যাতে আমরা একটি আত্মনির্ভরশীল এবং সুশাসিত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারি।"

ভবিষ্যত লক্ষ্য

নতুন নামের মাধ্যমে ‘আঁম জনতা দল’ বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিসরে নিজেদের ভূমিকা আরও শক্তিশালী করতে চায়। দলের নেতৃত্ব জনগণের গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার এবং অধিকার প্রতিষ্ঠায় তাদের সংগ্রাম চালিয়ে যেতে সংকল্পবদ্ধ।