প্রকাশিত: ০৩:৩২ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
পাল্টে গেল সয়াবিন তেলের বাজার
যদিও আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন ও পাম অয়েলের দাম এখনো স্থিতিশীল, তবে বাংলাদেশের বাজারে সয়াবিন তেলের মূল্য হঠাৎই উর্ধ্বমুখী হতে শুরু করেছে। বিশেষ করে রমজান মাসের এক মাস আগে ব্যবসায়ীরা তেলের দাম বাড়ানোর পুরোনো কৌশল অবলম্বন করছেন, যার ফলে সয়াবিন তেলের বাজারে তৈরি হচ্ছে এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতি।
টিসিবি’র পরিসংখ্যান ও বাজারের অবস্থা
সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে খোলা সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বোতলজাত সয়াবিন তেলের ক্ষেত্রে। বিশেষত এক এবং দুই লিটারের বোতলজাত তেল পাওয়াটা বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, তারা চাহিদামতো তেল পাচ্ছেন না, ফলে ভোক্তাদের জন্য পণ্যটি খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
রমজানের আগেই দাম বাড়ানোর কৌশল
প্রতিবছরই রমজান মাসের আগে ব্যবসায়ীরা সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর জন্য একটি কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেন। পাইকারি ও খুচরা বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ কমিয়ে তারা এক ধরনের চাপ তৈরি করে, যার ফলে দাম বাড়ানো হয়। এবছরও একই পথ অনুসরণ করছেন ব্যবসায়ীরা, এমনটাই জানিয়েছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অবস্থান
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে গত জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর জন্য একটি প্রস্তাব দেয়া হয়। সেই প্রস্তাবে প্রতি লিটার তেলের দাম ১৫ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব ছিল। ২৩ জানুয়ারি, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশীরউদ্দিন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করলেও, দাম বৃদ্ধির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
ভ্যাট ছাড় এবং বাজারের সমন্বয়
সরকারের পক্ষ থেকে গত বছর ভোজ্য তেলের দাম স্থিতিশীল রাখার জন্য ভ্যাট ছাড় দেয়া হয়েছিল, তবে বর্তমানে ব্যবসায়ীরা সয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধির জন্য চাপ সৃষ্টি করছেন। বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য সময় চেয়ে নিলেও, এখনও সেই প্রতিবেদন আসেনি।
এদিকে, বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, ২০১১ সালের নীতিমালা অনুসারে, সয়াবিন তেলের দাম বৈশ্বিক বাজারের পরিস্থিতি এবং অভ্যন্তরীণ খরচের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাড়ানো উচিত। বর্তমানে ডলার এবং অন্যান্য খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা সরকারের কাছে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব জানিয়েছেন।
বাজারের ভবিষ্যৎ এবং ভোক্তাদের উদ্বেগ
এভাবে যদি সংকট সৃষ্টি হয় এবং দাম বাড়ানো হয়, তবে রমজান মাসে ভোক্তাদের জন্য সয়াবিন তেলের দাম আরও বাড়তে পারে। এই পরিস্থিতিতে সরকারের জন্য প্রয়োজন আরও কার্যকর পদক্ষেপ যাতে বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা যায় এবং ভোক্তাদের ভোগান্তি কমানো সম্ভব হয়। যদি ব্যবসায়ীরা নিজেদের স্বার্থের জন্য বাজারে অনিয়ম তৈরি করতে থাকেন, তবে তা শুধু ভোক্তাদের জন্য নয়, জাতীয় অর্থনীতির জন্যও ক্ষতিকর হতে পারে।
এই অবস্থা মোকাবিলা করতে সরকারের সময়োপযোগী এবং কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা এখন অতিব জরুরি।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ জাকারিয়া ইসলাম
ঠিকানা: ৫২/৬, র্যামস উইনিটি, পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থপথ, ঢাকা-১২০৫
বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন: ০১৭২২-৫৬৮০০৮
© ২০২৫ | অল নিউজ বিডি ২৪ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ডিজাইন | অল নিউজ বিডি ২৪