;
আয়-রোজগারের রহমত: দোয়া, আমল ও আল্লাহর পথে বরকত লাভের উপায়

আয়-রোজগারের রহমত: দোয়া, আমল ও আল্লাহর পথে বরকত লাভের উপায়

আল্লাহ তাআলা মানবজাতিকে তাঁর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হিসেবে পাঠিয়েছেন এবং প্রতিটি জীবের রিজিকের মালিকও তিনি। তবে আল্লাহ তাআলা মানুষের রিজিক বিনাশ্রমে দেন না, বরং পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে রিজিক লাভ করতে হয়। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানব জীবনে আয়-রোজগারকে এক অপরিহার্য ফরজ হিসেবে গণ্য করেছেন, যার মাধ্যমে মানুষের দুনিয়া ও আখিরাতের সফলতা নিশ্চিত হয়।

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, “তিনি তোমাদের জন্য জমিনকে সুগম করেছেন, কাজেই তোমরা তার পথে-প্রান্তরে চলাফেরা করো এবং তার রিজিক থেকে আহার করো।” (সুরা মুলক: ১৫)

আয়-রোজগারের মধ্যে বরকত এবং প্রশস্ততা আনতে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিছু দোয়া শিখিয়েছেন, যা মানুষের জীবনে সুখ-শান্তি ও প্রাচুর্য আনে।

প্রথম দোয়াটি হলো:

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ذَنْبِي وَوَسِّعْ لِي فِي رِزْقِي وَبَارِكْ لِي فِيمَا رَزَقْتَنِي

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাগফির লি জাম্বি, ওয়া ওয়াসসি লি ফি রিজকি, ওয়া বারিক লি ফিমা রাজাকতানি। (তিরমিজি: ৩৫০০)

অর্থ: হে আল্লাহ, আমার গুনাহ ক্ষমা করুন, আমার রিজিক প্রশস্ত করুন এবং আপনি আমাকে যে জীবিকা দিয়েছেন তাতে বরকত দিন।

দ্বিতীয় দোয়া, যা রিজিক বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ:

اللهم اكْفِنِي بِحَلَالِكَ عن حَرَامِكَ ، وَأَغْنِنِي بِفَضْلِكَ عَمَّنْ سِوَاكَ

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাকফিনি বি হালালিকা আন হারামিকা, ওয়া আগনিনি বিফাদলিকা আম্মান সিওয়াক। (তিরমিজি: ৩৫৬৩; মুসনাদ আহমদ: ১৩২১)

অর্থ: হে আল্লাহ! হারামের পরিবর্তে আপনার হালাল রুজি আমাকে যথেষ্ট দিন এবং আমাকে অন্যদের মুখাপেক্ষী না করে, আপনার অনুগ্রহে সম্পূর্ণভাবে সচ্ছল করুন।

এছাড়া, আয়-রোজগারে বরকত আনার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল রয়েছে, যা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রকে সমৃদ্ধ করে তোলে। তবে সবার আগে মনে রাখতে হবে, অঢেল অর্থই সবসময় সুখ আনয়ন করে না, বরং বরকতপূর্ণ রিজিকের মধ্যে শান্তি ও তৃপ্তি রয়েছে।

তাকওয়া (আল্লাহর ভয়):

আল্লাহ তাআলা বলেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্য একটি নিষ্কৃতি পথ তৈরি করবেন এবং তাকে তার ধারণার বাইরে থেকেও রিজিক প্রদান করবেন।” (সুরা তালাক, আয়াত: ২-৩)

হাফেজ ইবনে কাসির (রহ.) বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর নির্দেশনা অনুসরণ করে এবং নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকে, আল্লাহ তাকে এমন পথ প্রদর্শন করবেন, যেখানে সে কখনো ভাবেনি যে রিজিক পাওয়া যাবে।

পাপাচার থেকে মুক্তি:

নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “দোয়া ভাগ্য পরিবর্তন করে, নেক কাজ আয়ু বাড়ায়, আর পাপের কারণে জীবিকা থেকে বঞ্চিত হয়।” (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ২২৪১৩)

পাপের কাজ জীবনে বরকতকে মুছে ফেলে, কিন্তু নেক আমল ও ভালো কাজ জীবনে শান্তি ও সমৃদ্ধি নিয়ে আসে।

হালাল উপার্জন:

হালাল উপার্জন ও সদকা মানুষের জীবনে প্রকৃত বরকত আনে। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “হালাল জীবিকা অর্জন ফরজের পর একটি বিশেষ ফরজ।” (শুআবুল ইমান, বায়হাকি; কানযুল উম্মাল: ৯২০৩)।

মহান আল্লাহ বলেন, “হে আদম সন্তান! তুমি খরচ করো, তোমার জন্য খরচ করা হবে।” (বুখারি: ৫৩৫২)

সবশেষে, আয়-রোজগারের মধ্যে প্রকৃত সুখ ও শান্তি আনতে আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা, তাকওয়া এবং দান-সদকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহর পথে চললে আমাদের জীবনে বরকত আসবে, এবং সব রকমের চ্যালেঞ্জের মধ্যেও আমরা সফল হতে পারব।

প্রকাশক ও সম্পাদকঃ জাকারিয়া ইসলাম

ঠিকানা: ৫২/৬, র‍্যামস উইনিটি, পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থপথ, ঢাকা-১২০৫

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন: ০১৭২২-৫৬৮০০৮

সোশ্যাল মিডিয়াতে আমরা

info@allnewsbd24.com

allnewsbd24.info@gmail.com

© ২০২৫ | অল নিউজ বিডি ২৪ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ডিজাইন | অল নিউজ বিডি ২৪