ছাত্র আন্দোলনের মুখে আরেক দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ

সার্বিয়ার প্রধানমন্ত্রী মিলোশ ভুসিচ মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) তার পদত্যাগ ঘোষণা করেছেন, যা দেশের চলমান ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ঘটেছে। প্রধানমন্ত্রী তার পদত্যাগের কারণ হিসেবে দেশের উত্তেজনা কমানোর উদ্দেশ্য জানিয়ে বলেন, "আমি সবার প্রতি আহ্বান জানাই, তাদের আবেগগুলো শান্ত করুন এবং সংলাপে ফিরে আসুন।"

তবে, তার পদত্যাগ কার্যকর হতে হলে সার্বিয়ার সংসদের অনুমোদন প্রয়োজন। এরপর, সংবিধান অনুযায়ী ৩০ দিনের মধ্যে একটি নতুন সরকার গঠন করতে হবে অথবা আগাম নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।

বেলগ্রেডে এক সংবাদ সম্মেলনে ভুসিচ তার পদত্যাগকে একটি "অবিচল সিদ্ধান্ত" হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, "আজ সকালে, আমি সার্বিয়ার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেছি। আমরা সব বিষয়ে আলোচনা করেছি, এবং তিনি আমার reasoning মেনে নিয়েছেন। সমাজে আরও অশান্তি এড়াতে এবং অতিরিক্ত উত্তেজনা রোধ করতে আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।"

ভুসিচ আরও স্পষ্ট করে জানান, তিনি ও তার মন্ত্রীরা পদত্যাগ না করলেও তাদের কার্যভার চলতে থাকবে, যতদিন না নতুন সরকার গঠিত হয়।

সাম্প্রতিক দিনগুলোতে তীব্র হওয়া ছাত্র আন্দোলন মূলত নভেম্বরে নোভি সাদের একটি রেলওয়ে স্টেশন নির্মাণে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে উত্থাপিত হয়েছে। ১৫ নভেম্বর স্টেশনটির ছাদ ধসে পড়ে ১৫ জন নিহত হয়। প্রতিবাদকারীরা দাবি করছেন, এই দুর্ঘটনা নির্মাণ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির কারণে ঘটেছে, তাদের মতে, যদি প্রকল্পটি সঠিকভাবে পরিচালিত হতো, তাহলে এই মৃত্যুগুলি প্রতিরোধ করা সম্ভব ছিল।

এই আন্দোলনের প্রতিক্রিয়া হিসেবে, সোমবার বেলগ্রেডে ছাত্ররা একটি প্রধান সড়ক অবরোধ করে এবং কৃষকরা প্রতিবাদে যোগ দেয়, যার ফলে অটোকোমান্ডা জংশন বন্ধ হয়ে যায় এবং শহরের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অচল হয়ে পড়ে। এর ফলে সার্বিয়ার কার্যক্রম ব্যাহত হয়। সার্বিয়ার রাষ্ট্রপতি আলেকসান্দার ভুসিচ প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের উদ্বেগ শুনেছেন।

এছাড়া, নোভি সাদের মেয়র মিলান ডিউরিচ তার পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন, যা বিরোধী আন্দোলনকে আরও তীব্র করেছে।

এ পরিস্থিতি সার্বিয়ায় রাজনৈতিক সংকটের একটি নতুন অধ্যায়। এটি বাংলাদেশের গত বছরের আগস্ট মাসে ঘটে যাওয়া এক ছাত্রনেতৃত্বাধীন আন্দোলনের সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে, যেখানে প্রধানমন্ত্রী তার পদত্যাগের পর ভারতে পালিয়ে যান। এই ঘটনা দক্ষিণ এশিয়ায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছিল এবং সার্বিয়ার পরিস্থিতি এখন বিশ্বজুড়ে নজর কেড়েছে।