ভারত বনাম আফগানিস্তান: গতকাল শেষ হয়েছে ভারত বনাম আফগানিস্তানের মধ্যকার তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। প্রথম দুই ম্যাচ জিতে আগেই সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছিল স্বাগতিক ভারত। আর শেষ ম্যাচ জিতে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াস করলো ভারত।
তবে ম্যাচের পরতে পরতে ছিল রমাঞ্চ। ভারতের দেয়া ২১২ রানের বিশাল টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে টাই করে বসে অফগানিস্তান। এরপর ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। সুপার ওভারেই ম্যাচ হয় টাই। তবে ২য় সুপার ওভারে ম্যাচ জিতে নেয় স্বাগতিক ভারত। টি-টোয়েন্টি ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা এক ম্যাচ হয়ে ইতিহাসের পাতাই লেখা থাবে এটি। তবে এমন এক ম্যাচেও বিতর্ক পিছু ছাড়েনি।
রমাঞ্চকর ম্যাচের দুই সুপার ওভারেই ব্যাট করে ভারতের ওপেনার রোহিত শর্মা। যা নিয়ে চারে দিকে শুরু হয়েছে আলোচনা সমালোচনা। আইসিসির নিয়মে বলা আছে, কোনো ব্যাটার প্রথম সুপার ওভারে আউট হলে দ্বিতীয় সুপার ওভারে ব্যাট করতে পারবেন না।
এখন সবার মনে প্রশ্ন, তবে কি আম্পায়াররা ভুল করেছেন না কি রোহিত নিয়ম ভেঙেছেন? আইসিসির পুরুষদের আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির প্লেয়িং কন্ডিশনের ষষ্ঠ পরিশিষ্টের ২২ নম্বর নিয়মে পরিস্কার ভাবে বলা আছে, ‘আগের কোনো সুপার ওভারে আউট (যে কোনো ধরনের আউট) হয়ে যাওয়া কোনো ব্যাটার পরবর্তী কোনো কোনো সুপার ওভারে ব্যাট করার যোগ্য হবেন না।’ তার মানে হলো কোনো ব্যাটার যদি একটি সুপার ওভারে ব্যাট করতে নেমে আউট হয় তাহলে ঐ ম্যাচে আরেকটি সুপার ওভারে ব্যাট করতে পারবে না।
আর আইসিসির এই নিয়ম অনুযায়ী কালকের ম্যাচের দ্বিতীয় সুপার ওভারে ব্যাট করতে পারবে না রোহিত শর্মা। কেননা প্রথম সুপার ওভারে তিনি ‘রিটায়ার্ড আউট’ হন। এখানে একাংশের যুক্তি ছিল যে রোহিত ‘রিটায়ার্ড হার্ট’ হয়েছেন।
আর স্কোরকার্ডেও ‘রিটায়ার্ড আউট’ লেখা আছে রোহিতের নামের পাশে। আর প্রথম সুপার ওভারে ১টি উইকেট দেখাচ্ছে (ম্যাচের সময় স্কোরকার্ডেও তাই দেখানো হচ্ছিল)। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম সুপার ওভারের শেষ বলের আগে রোহিত যা করেছেন, সেটা ক্রিকেটের আইনে বৈধ। কিন্তু দ্বিতীয় সুপার ওভারের ক্ষেত্রে আম্পায়াররা ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
গতকাল রমাঞ্চকর ম্যাচে প্রথম সুপার ওভার আগে ব্যাট করে আফগানিস্তান ভারতকে ১৭ রানের টার্গেট দেয়। ওভারের ৩য় ও ৪র্থ বলে ছক্কা মেরে ১২ রান নেয় ভারত। যার ফলে শেষ ২ বল দরকার ছিল ৩ রান। ৫ম বলে ১ রান নিয়ে নন স্ট্রাইকে আসে রোহিত। ব্যাটিংয়ে থাকে যশস্বী জয়সওয়াল। শেষ বলে দরকার ২ রান। সেই সময় মাঠ ছাড়েন রোহিত। ক্রিজে আসেন রিঙ্কু সিং।
কেন রোহিত সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা সবার জানা। তরুণ রিঙ্কু সিং দ্রুত দৌড়াতে পারবেন বলে তাকে জায়গা ছেড়ে দেন রোহিত। যা নিয়মের মধ্যেই পড়ে। তবে এতে কোনো লাভ হয়নি ভারতের। এক রানের বেশি নিতে পারেনি যশস্বী। যার ফলে প্রথম সুপার ওভারেই ম্যাচ টাই হয়।
শুরু হয় দ্বিতীয় সুপার ওভার। ব্যাট করতে আসেন রোহতি শর্মা ও রিঙ্কু। তবে এখানে রিঙ্কু ব্যাট করতে আসাতে কোনো বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ার সুযোগ নাই। কেননা তিনি আউট হননি। এখানে সব বিতর্ক শুরু হয় রোহিতের ব্যাট করা নিয়ে। দেখা দেয় দ্বিধা দ্বন্দ। তাকে প্রথম সুপার ওভারে ‘রিটায়ার্ড হার্ট’ না ‘রিটায়ার্ড আউট’ দেখানো হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত
আইসিসির স্কোরকার্ডে যাবতীয় ধোঁয়াশা কেটে গিয়েছে। সেখানে রোহিতকে ‘রিটায়ার্ড আউট’ দেখানো হয়েছে। আর আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, ‘আউট’ হলে দ্বিতীয় সুপার ওভারে রোহিতের ব্যাট করতে নামার কথা ছিল না। কিন্তু সেটাই হয়েছে।