মাশরাফিকে বিসিবি সভাপতি হিসেবে দেখতে চায় না প্রভাবশালী মহল
বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা অধিনায়ক মাশরাফি বিন মূর্তজা। তার অধিনায়কত্বে বাংলাদেশকে নতুন করে চিনেছে ক্রিকেট বিশ্ব। বিশ্বকাপের সেরা ৮ এ খেলা, এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলা ও চ্যাম্পিয়ান্স ট্রফির সেমি ফাইনাল সব এসেছে মাশরাফির অধিনায়কত্বে। এখন আর জাতীয় দলের সাথে নেই বাংলাদেশের এই সেরা অধিনায়ক। খেলছেন শুধু ঘরোয়া ক্রিকেট। তবে সেইটাও হয়তো আর বেশি দিন খেলবেন না তিনি। তাইতো সোশ্যাল মিডিয়াতে মাশরাফিকে বিসিবি সভাপতি হিসেবে দেখার ঝড় তুলেছে তার ভক্ত সমর্থকরা।
কেননা বিসিবি সভাপতি নাজমুল হোসেন পাপন ঘোষণা দিয়েছেন আর বেশি দিন বিসিবির দায়িত্বে থাকবেন না তিনি। যত দ্রুত এই দায়িত্ব ছাড়তে চান তিনি। তবে মাশরাফি এখনি বিসিবি সভাপতি হতে পারছেন না নিয়মের বেড়াজালের কারণে।
তবে এছাড়াও আছে আরও একটি কারণ। জানা গেছে মাশরাফীকে বিসিবির সভাপতি হিসেবে চায় না প্রভাবশালী মহল। বিসিবির অনেক পরিচালকরা মুখে মাশরাফিকে বিসিবি সভাপতি হিসেবে চাইলেও ভিতরে ভিতরে আছে অন্য কথা। পরিচালকরা এখন বিসিবি সভাপতি হিসিবে নাজমুল হোসেন পাপনকেই চায়। নাজমুল হোসেন পাপনের ওপর তাদের আগাত আস্থা।
জন দাবি থাকা সত্তেই কেন মাশরাফি বিসিবি সভাপতি হতে পারছেন না? কেন বিসিবি সভপতির দায়িত্ব ছাড়তে পারছেন না পাপন? কেন পাপনকে নেতৃত্বে রাখতে চায় প্রভাবশালী মহল? সব কিছু এখন পরিস্কার।
বিসিবির নেতৃত্বে সিনিয়রিটির প্রভাব:
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে যে সকল পরিচালক বা কর্মকর্তা আছেন তাদের ৯৫ শতাংশ মাশরাফির সাথে খেলেছেন বা তাদের অধিনে মাশরাফি খেলেছে। তাই সবাইকে টপকে মাশরাফি বিসিবি সভাপতি হবেন এটা সম্ভব না বলে জানিয়েছেন বোর্ডের একাধিক পরিচালক ও ও বোর্ডের একধিক সাবেক সিনিয়ার ক্রিকেটার।
সভাপতি হিসিবে পাপনে আস্থা:
বিসিবির বর্তমান বোর্ডের শক্তির জায়গা হলো বোর্ড পরিচালকদের একতা। বিসিবি বস পাপনের নেতৃত্বকে সবাই শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় দেখেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বোর্ড পরিচালক বলেন পাপনের মন্ত্রীত্বকে কাজে লাগিয়ে বিসিবির সাফল্যকে এমন পর্যায়ে নিয়ে যাবে যাতে প্রধানমন্ত্রী অন্য কাউকে বিসিবি বস হিসেবে না ভাবেন।
বর্তমান কমিটির মেয়াদে ক্রিকেট সূচি:
২০২৫ সালের অক্টবর পর্যন্ত বর্তমান কমিটির মোয়াদ থাকবে। এই সময় সরকারের হস্তেক্ষেপে মাশরাফিকে বোর্ড সভাপতি করলে হিতে বিপরীত হতে পারে। আসতে পারে আইসিসির নিষেধাজ্ঞা। বাংলাদেশের সামনে আছে টি-টোয়েন্টি বিশ্ব কাপ ও চ্যাম্পিয়ান্স ট্রফির মত মেগা আসর। তাইতো নেতৃত্ব না বদলে এসব টুর্নামেন্টে ভালো রেজাল্টের মাধ্যমে পাপনের লিডারশীপকে প্রধানমন্ত্রীর গুড বুকে রাখতে চান পরিচালকরা।
বোর্ডে প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজনদের প্রভাব:
বিসিবির বোর্ড পরিচালকদের মধ্যে বড় নাম নজীব আহমেদ ও শেখ সোহেল দুজনই প্রধানমন্ত্রীর পারিবারিক আন্তীয়। এছাড়াও শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ও মঞ্জুর কাদের প্রধানমন্ত্রীর আস্থা ভাজন। পাশাপাশি ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি জয়ী অধিনায়ক আকরাম খান, বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয় ও সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজনের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে আছে সরাসরি আকসেস।
এই সাত জন মাশরাফির নেতৃত্বকে মেনে নিবেন কিনা তা নিয়ে আছে সন্দহ। আর যারা আছেন তাদের ব্যবহার করে পাপন বিসিবি সভাপতির রাখার বার্তা প্রধান মন্ত্রীর কাছে দিয়ে রাখতে পারে তারা।
বেক্সিমকোর দায়িত্ব থেকে পাপনের সরে আসা:
দীর্ঘ দিন ধরে বেক্সিমকোর মত বড় বাণিজ্যিক প্রতিষ্টান ও বিসিবি এক সাথে সামলে এসেছে বিসিবি সভাপতি। আর এখন তো বিসিবির দায়িত্ব থেকে সরে এসেছেন। তাই মন্ত্রীত্ব ও বিসিবির দায়িত্ব সামলাতে অসুবিধা হওয়ার কথা না বিসিবি বসের। তাইতো পাপনের মন্ত্রীত্বকে কাজে লাগিয়ে বিসিবির সাফল্যকে আরও এগিয়ে নিতে চান একাধিক বোর্ড পরিচালক।
তাইতো যতই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা মাশরাফির ক্রিকেট ভক্তরা আওয়াজ তুলুক না কেনো বিসিবি সভাপতি হিসেবে দেখা যাবে মাশরাফিকে।