২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে সাকিবের খারাপ খেলার আসল রহস্য ফাঁস
বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তার সাহস নিয়ে কখনো কারো কোনো সন্দেহ ছিল না। বরাবর তিনি একজন সাহসী নেতা হিসেবে নিজেকে সবার সামনে প্রমাণ করেছেন। ব্যাট ও বল উভয় বিভাগে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পছন্দ করে থাকেন। তবে ২০২৩ বিশ্বকাপে দেখা গেছে অন্য এক সাকিবকে। ছিলেন পুরোটা নির্বিষ। যেমন নিজে ভালো কিছু করতে পারেননি তেমনি দলও যাচ্ছেতাই পারফরম্যান্স করে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেয়।
কিন্তু এই সাকিব ২০১৯ বিশ্বকাপে নিজের পারফরম্যান্সের ঝলকে সবার চোখ কপালে তুলেছিলেন। ব্যাট হাতে ঝলে উঠে করেছিলেন ৬০৬ রান। সেই বিশ্বকাপে বাংলাদেশ যদি নকআউটে খেলতো তাহলো হয়তো ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্টও হওয়ার সম্ভাবনা ছিল সাকিবের।
অথচ সেই সাকিব ২০২৩ বিশ্বকাপে ব্যাটিংয়ে রীতিমত সবাইকে হতাশ করেছেন।
ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ‘ক্রিকবাজ’-এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে সব রহস্যের জট খুললেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তিনি জানালেন, বিশ্বকাপে স্ট্রেস-রিলেটেড ইস্যুতে (মানসিক চাপ) চোখে সমস্যা দেখা দিয়েছিল তার।
২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে দুটি ম্যাচ ইনজুরির কারণে খেলতে পারেননি তিনি। বাকি সাত ম্যাচে ২৬.৫৭ গড়ে মোটে ১৮৬ রান করেন। নিজের ব্যাটিং নিয়ে নিজেও এতটাই হতাশ ছিলেন যে টুর্নামেন্ট চলাকালীন দেশে এসে ছেলেবেলার মেন্টর নাজমুল আবেদিন ফাহিমের সঙ্গে আলাদা প্র্যাকটিস সেশন করেন বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার।
শেষমেষ সাকিব জানালেন, তার আসলে কী সমস্যা হচ্ছিল। রবিবার ‘ক্রিকবাজ’-এর সঙ্গে আলাপকালে সাকিব বলেন, ‘আসলে বিশ্বকাপে একটি বা দুটি ম্যাচ নয়, পুরো টুর্নামেন্টজুড়েই আমার এই সমস্যা ছিল (চোখের)।’
সাকিবকে প্রশ্ন করা হয় এক চোখে খেলতে এবং ব্যাটিং করতেই কি মূলত সমস্যাটা হয়েছিল কিনা? এমন প্রশ্নে সাকিব বলেন, ‘এটা হতে পারে। বল মোকাবেলা করতে আমার বেশ অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল।’
মেডিকেল সায়েন্স বলছে, মানসিক চাপের কারণে মস্তিষ্ক আক্রান্ত হলে সেটা চোখের সমস্যা করতে পারে। স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণ হলে সেটা সরাসরি দৃষ্টিকে বাধাগ্রস্থ করতে পারে।
তবে সাকিব নিশ্চিত নন, মানসিক চাপের কারণেই তার এমনটা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘যখন আমি ডাক্তারের কাছে যাই, আমার কর্নিয়া কিংবা রেটিনায় পানি ছিল। তারা আমাকে ড্রপ দেন এবং বলেন, যাতে স্ট্রেস কমাই। আমি জানি না এটাই কারণ কিনা। তবে আমি যখন আবার আমেরিকাতে (বিশ্বকাপের পর) পরীক্ষা করাই, যখন কোনো স্ট্রেস ছিল না। আমি ডাক্তারকে বলেছিলাম, বিশ্বকাপ যেহেতু শেষ, স্বাভাবিকভাবেই স্ট্রেস কমে গেছে।’
যদিও এই সমস্যার কারণে অধিনায়কত্বে প্রভাব পড়েছে, সেই অজুহাত দিতে চান না সাকিব। তবে তিনি মনে করেন, যদি তাকে আরও আগে নেতৃত্ব দেওয়া হতো, তবে প্রস্তুত হয়ে যেতে পারতেন।
সাকিবের ভাষায়, ‘আমি যে সমস্যাটায় পড়েছিলাম (অধিনায়ক হিসেবে), আমার চিন্তাভাবনা বা দর্শন যেমন, দলটা সেভাবে প্রস্তুত ছিল না। শুধু বিশ্বকাপই নয়, ২০২৩ সালে আমাদের ওয়ানডে পারফরম্যান্স দেখলেও দেখবেন, এমনিতেও আমরা খুব ভালো খেলিনি।