ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট সিরিজ: সিরিজের শেষ টেস্ট ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে স্বাগতিকরা। সিরাজের বোলিং তোপে প্রথম ইনিংসে মাত্র ৫৫ রানে অল-আউট দক্ষিণ আফ্রিকা। যা ১৯৩২ সালের পর এটি দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বনিম্ন স্কোর। সিরাজ একাই নেন ৬ উইকেট।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ভারতও নিজেদের প্রথম ইনিংসে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি। দক্ষিণ আফ্রিকার পেসারদের বোলিং তোপে প্রথম ইনিংসে ১৫৩ রানে অল-আউট হয় ভারত। চা-বিরতির পর একটা সময় ভারতের রান ছিল ১৫৩/৪। তার পরে মাত্র ১১ বলে ০ রানে ভারতের ৬টি উইকেট পড়ে যায়। কিন্তু এর ফলে লজ্জার বিশ্বরেকর্ড গড়েছে ভারত। ভারত লিড নেয় ৯৮ রানের। রাবাদা, নান্দ্রে বার্জার ও লুঙ্গি এনগিদি নিয়েছেন ৩টি করে উইকেট।
২য় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ৩ উইকেটের বিনিময়ে ৬২ রান স্কোর বোর্ডে জমা করে দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ করে প্রথম দিনে খেলা। ৩ উইকেটে ৬২ রান নিয়ে আজ ২য় দিনে ব্যাটিং শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা। শেষ পর্যন্ত ১৭৬ রানে নিজেদের ২য় ইনিংসে অল-আউট হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলে লিড গিয়ে থামে ৭৮ রানে। জয়ে জন্য ভারতের মাত্র ৭৯ রান। ১টি করে উইকেট নেন সিরাজ ও প্রসিধ কৃষ্ণা। মুকেশ কুমার ২টি ও জাসপ্রিত বুমরাহ একাই নিয়েছেন ৬ উইকেট।
দক্ষিণ আফ্রিকার দেয়া ৭৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৩ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌছে যায় সফরকারী ভারত। রোহিত ১৭ রানে ও শ্রেয়ার আয়ার ৪ রানে অপরাজিত থাকেন। ৭ উইকেটের জয়ে নিয়ে মাঠ ছাড়ে ভারত। ১টি করে উইকেট নেন রাবাদা, জনসন ও বার্জার। সিরিজ শেষ হলো ১-১ সমতায়।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংসের বিবরণ:
এইডেন মার্করাম ২, ডিন এলগার ৪ ও টনি ডি জর্জি ২ রান করে সিরাজের শিকার হন তারা। ত্রিসতান স্টাবসকে ৩ রানে সাজ ঘরের পথ ধরান জাসপ্রিত বুমরাহ। কাইল ভেরিনে ১৫, ডেভিড বেডিংহাম ১২ ও মার্কো জানসেনকে ০ রানে ফেরান সিরাজ। কেশভ মহারাজকে ৩ রানে ফেরান মুকেশ কুমার।
৬ উইকেট একাই নিয়েছেন সিরাজ। রাবাদাকে ৫ রানে ফেরান মুকেশ কুমার। শেষ পেরেকটা ঠুকেন বুমরাহ। নান্দ্রে বার্জারকে ফেরান ৪ রানে। ০ রানে অপরাজিত থাকে এনগিডি। ফলে ৫৫ রানে অল-আউট দক্ষিণ আফ্রিকা।
দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রথম ইনিংসে ৫৫ রানে অল-আউট করে ব্যাটিং শুরু করে ভারত। শুরুতেই ওপেনার যশস্বী জয়সোয়ালকে হারালেও রান উঠে ওয়ানডে স্টাইলে। ছন্দে থাকা ভারতীয় ব্যাটারদের হঠাৎ ছন্দ পতন হয়। ভালো খেলতে থাকা রোহিত ফিরেছেন ৩৯ রান করে। গিলও ফিরেছেন ৩৬ রানে।
শ্রেয়াস আয়ার ফিরেছেন ০ রানে, লোকেশ রাহুল করেছেন ৮ রান। রবিন্দ্র জাদেজা, সিরাজ, মুকেস কুমার ও জাসপ্রিত বুমরাহ ফিরেছেন 0 রানে। কোহলি করেছেন ৪৬ রান। রাবাদা, নান্দ্রে বার্জার ও লুঙ্গি এনগিদি নিয়েছেন ৩টি করে উইকেট। ১৫৩ রানে অল-আউট ভারত।
দক্ষিণ আফ্রিকার ২য় ইনিংসের বিবরণ:
নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো শুরু পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে তা ধরে রাখতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা। দক্ষিণ আফ্রিকার ২য় ইনিংসে প্রথম আঘাত আনে মুকেশ কুমার। ১২ রানে ডিন এলগার ফেরান তিনি। এপরর আবারও সেই মুকেশ কুমারে আঘাত। এবার ১ রানে টনি ডি জর্জিকে ফেরান তিনি। ত্রিসতান স্টাবসকে ১ রানে ফেরান জাসপ্রিত বুমরাহ।
২য় দিনে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন এইডেন মার্করাম। তবে সেঞ্চুরির পর আর বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি তিনি। ১০৬ রানে তাকে ফেরান প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট পাওয়া সিরাজ। এরপর ভারতের বোলারদের সামনে আর তেমন কেউ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি। ডেভিড বেডিংহামকে ১১ রানে ফেরান জাসপ্রিত বুমরাহ।
কাইল ভেরিনে ৯, মার্কো জানসেন ১১ ও কেশভ মহারাজকে ৩ রানে ফেরান জাসপ্রিত বুমরাহ। পুরন করেন নিজের ফাইফার। প্রসিধ কৃষ্ণা শিকার হন কাগিসো রাবাদা। করেন মাত্র ২ রান। আর শেষ উইকেটটা তুলে নেন জাসপ্রিত বুমরাহ। তিনি লুঙ্গি এনগিদিকে ফেরান ৮ রানে।
ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসের বিবরণ:
৭৯ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ওয়ানডে স্টাইলে করে। ২৮ রান করে নান্দ্রে বার্জারের বলে কাটা পড়েন যশস্বী জয়সোয়াল। রাবাদার বলে বোল্ড হন শুবমান গিল। ১০ রান করেন তিনি। বিরাট কোহলিকে ১২ রানে ফেরান মার্কো জানসেন।
রেকর্ড:
১৮৮৮ সালে টেস্টের প্রাচীন যুগে ইংল্যান্ড বনাম অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার ম্যাচে লর্ডসে একদিনে পড়েছিল ২৭ উইকেট। কিন্তু সেটা ছিল সিরিজের ২য় দিনে। তবে প্রথম দিনে ২৩ উইকেট বা তার উইকেট পড়ার ঘটনা ঘটেছিল একবার। সেটা ১৯০২ সালে মেলবোর্নে। অস্ট্রেলিয়া বনাম ইংল্যান্ডের মধ্যকার একটি ম্যাচে এই ঘটনা ঘটে। প্রথম দিনে পড়েছিল ২৫ উইকেট।
প্রায় দীর্ঘ ১২২ বছর পর আবার টেস্টের প্রথম দিনে ২৩ উইকেট পড়লো। ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার দ্বিতীয় টেস্টে। এই দিন কেপটাউনে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে ৫৫ রা অল-আউট হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে ব্যাট করতে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ১৫৩ রানে অল-আউট হয় ভারত। ফলে ১০+১০=২০। আবার ২য় ইনিংস ৩ উইকেট হারিয়ে বসে দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলে একদিন ২৩ উইকেট পড়ে যায়।