বাংলাদেশের খ্যাতিমান নাট্যজন মামুনুর রশীদ, যাকে শিল্পকলার মঞ্চে অভিনয় থেকে সাময়িক দূরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তার প্রতি এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ তার বিরুদ্ধে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যা চলমান নাট্যপাড়ার অস্থির পরিবেশের কারণে বলে জানা গেছে।
অভিনয় থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ
মামুনুর রশীদ অভিযোগ করেন, শিল্পকলা একাডেমির কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রভাবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, "মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ তার নিজের মতামত না শুনে অন্যদের কথা অনুসরণ করেছেন।" এরই মধ্যে তিনি প্রকাশ করেন, তিনি বিপ্লববিরোধী আখ্যা পেয়েছেন, অথচ তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা।
বিবৃতি নিয়ে বিতর্ক
মামুনুর রশীদ বলেন, "একটি বিবৃতি দিয়েছিলাম, যেখানে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’ এই স্লোগানটি দেয়া উচিত হয়নি বলে মন্তব্য করেছিলাম। কিন্তু এই বিবৃতির মধ্যে কোনো বিপ্লববিরোধী চিন্তা ছিল না।" তিনি জানান, তিনি নিজেও গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছেন, পুলিশের গুলিতে আহত ছাত্রদের প্রতিবাদ করেছেন এবং ছাত্র হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে মিছিল করেছেন। এরপরও কেন তাকে শিল্পকলা একাডেমির মঞ্চে অভিনয়ের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে, তা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন।
‘ময়ূর সিংহাসন’ নাটক নিয়ে মঞ্চে উঠলেন সুষ্ঠুভাবে
মামুনুর রশীদ আরো বলেন, “কয়েকদিন আগে নাট্যদল আরণ্যকের ‘ময়ূর সিংহাসন’ নাটক মঞ্চায়ন করেছিলাম, যেখানে কোনো সমস্যা হয়নি। দর্শকরা নাটকটি উপভোগ করেছেন।” এর পরেও তাকে শিল্পকলা একাডেমির মঞ্চে অভিনয়ের সুযোগ দেওয়া হয়নি, যা তাকে আরও ক্ষুব্ধ করেছে।
শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকের প্রতিক্রিয়া
এ বিষয়ে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ বলেন, "আমরা মামুনুর রশীদকে শিল্পকলার মঞ্চে অভিনয় থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তবে তাকে নিষিদ্ধ করা হয়নি। আমাদের অবস্থান কোনও নাট্যদলের বিপক্ষে নয়, বরং যেসব ব্যক্তি বিপ্লবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে এই সিদ্ধান্ত।" তিনি বলেন, "শিল্পকলা একাডেমির নাট্যকলা বিভাগ থেকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, বিপ্লবের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া ব্যক্তিদের আপাতত শিল্পকলার মঞ্চে পারফর্ম করতে দেওয়া হবে না।"
বিশেষ বিবৃতি নিয়ে বিপদে পড়া মামুনুর রশীদ
মামুনুর রশীদ তার নামও বিশিষ্টজনদের বিবৃতিতে ছিল, যেখানে তারা 'রাজাকার' স্লোগান নিয়ে বক্তব্য রেখেছিলেন। তিনি বলেন, "এখন তো বলা হচ্ছে, আমরা কথা বললে সেটা তো বলা যাবে না। এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে, শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বন্ধ করে দেওয়া চাচ্ছে একটি মহল।"
এভাবে শিল্পকলা একাডেমির সিদ্ধান্ত ও মামুনুর রশীদের প্রতিবাদ নাট্যপাড়ায় নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। তবে শিল্পকলার মঞ্চে এই নাট্যজনের ভবিষ্যত কী হবে, তা এখনও পরিষ্কার হয়নি।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ জাকারিয়া ইসলাম
ঠিকানা: ৫২/৬, র্যামস উইনিটি, পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থপথ, ঢাকা-১২০৫
বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন: ০১৭২২-৫৬৮০০৮